Lifestyle of a refugee is always disaster. One of my hoby is writing. Sometime I write short stories and poems in Bengali. Most of the writings are reflection of refugee life. I welcome you to my writing world. Please inscribe a comment, if possible. Thank you. Writing blog, writing blog for money, writing blog on instagram, writing blog posts, writing blog site, writing blog job, blogger, blogger platform, best free blogger site, ব্লগার, বাংলা ব্লগ, গল্প, কবিতা, গল্প ও কবিতা, #goutamaalee .
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
Squats: দেহের ভিত মজবুত রাখতে অপরিহার্য
বাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে ভিতের উপর। একতলার ভিতের উপর পাঁচ তলা বাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। তেমনি বিয়াল্লিশ তলার বাড়ি পাঁচতলার ভিতে হয়না তারজন্য বিয়াল্লিশ তলার উপযোগী ভিত তৈরি করে বাড়ি মজবুত করতে হয়।
মানবদেহ বাড়ি সদৃশ। তার ভিত নিচের থেকে কোমর পর্যন্ত। দেহের সেই ভিত যদি দূর্বল হয় তবে শরীর মজবুত থাকে না। আর দেহের ভিত মজবুত রাখতে স্কোয়াট এক অপরিহার্য অভ্যাস।
কিন্তু স্কোয়াট কী ?
Squats একটা ব্যায়াম। স্কোয়াট শরীর পরিচর্যার এক ধরণ যা পায়ের গোড়ালি, হাঁটু ও কোমরের কৌণিক অবস্থানের সমন্বয়ে গড়ে তুলতে হয় বা এই তিনের ত্রিভঙ্গতা। পায়ের পাতা মাটি/মেঝেতে রেখে হাঁটুতে এবং কোমরে ৯০ ডিগ্রি কোণ তৈরি করে আবার সোজা হয়ে দাঁড়ানো। এতে গোড়ালি, হাঁটু ও কোমরের পেশী, টিসু সবল হয়, থাইয়ের পেশী সবল হয়। হাড় মজবুত হয়।
স্কোয়াট করার নিয়ম:
*কোমরের প্রস্থতা/চওড়া অনুসারে দুই পা ফাঁক করে দাঁড়াতে হবে।
*শিরদাঁড়া সোজা রেখে গভীর শ্বাস নিতে হবে।
*শ্বাস ছাড়ার সময় নাভি মেরুদন্ডের দিকে টানতে হবে।
*আস্তে আস্তে অদৃশ্য চেয়ারে বসতে চেষ্টা করতে হবে, শরীর সোজা রেখে।
*হাঁটু ৯০ ডিগ্রি ভাজ করতে চেষ্টা করতে হবে। হাঁটুতে ব্যথা থাকলে জোর করে করা যাবে না, দরকার অভিজ্ঞের পরামর্শ।
* শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে হাত সামনের দিকে প্রসারিত করতে হবে। হিল ও হাঁটুতে চাপ অনুভব হবে।
* বাংলা "দ"এর মত হবে তবে হাঁটুর ভাজ ৯০ ডিগ্রির কম হবে না।
উপকারিতা:
১। শরীরের নিচের অংশ শক্তিশালী হওয়ার জন্য ভারি জিনিস তুলতে শক্তি ও সামর্থ্য জোগান দেয়। বুড়ো বয়সে নাতি নাতনীদের সঙ্গ দিতে, বাজার করতে সহায়ক হয়।
২। এটি একটি বিশেষ কার্যকরী শরীর চর্চা,(workout)। পেট,পিঠ, গোড়ালি ও পায়ের পেশীর কাজ করে, শক্তিশালী করে ও দক্ষতা বাড়ায়।
৩। আঘাত প্রতিরোধ করে। হাঁটুর চারপাশের পেশী ও টিসু সবল হয়, হাঁটুর স্থায়ীত্ব বাড়ে ও নানাবিধ সমস্যার থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
৪। জিমে না গিয়েও এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করে এই ওয়ার্ক আউট করা যায় এবং সম উপকার পাওয়া যায়। গতিশীলতা, নমনীয়তা অর্থাৎ সার্ভিক শারীরিক ভারসাম্যের জন্য এটি একটি সেরা অনুশীলন।
৫। স্কোয়াটস নিয়মিত করলে পিঠের নিচের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। মেরুদন্ড হয় পেলভিস,গ্লুট, হ্যামস্ট্রিং, নিতম্বের সম্প্রসারণ ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।
৬। হাড় সুস্থ সবল রাখে। হাড়ের ঘনত্ব, শক্তি, পুন নির্মানে সহায়তা করে। অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে, ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি কমায়।
৭। হাড়ের জয়েন্টগুলো তৈলাক্ত ও তরুণাস্থি পুষ্ট করে।
৮। শরীরের ভারসাম্য ( balance) রাখতে সহায়ক।
দিনে কতবার করতে হবে :
দশ, পনের বা কুড়ি বারের একটা সেট করে দুই বা তিন সেট করতে হবে। শরীরের কার্যক্ষমতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রথমে অল্প দিয়ে শুরু করতে হবে।
ক্যালরি বার্ন হয় কিনা :
যদি সঠিকভাবে নিয়মিত করা হয় তবে দিনে ৫০ থেকে ৭০ ক্যালরি বার্ন হয়।
কনক্লুশন:
শরীর যদি আমাদের মন্দির হয় তবে তার দীর্ঘস্থায়ীর জন্য সুন্দর ভিত তৈরি করা দরকার এবং প্রতিনিয়ত রক্ষনাবেক্ষণ দরকার। আর সেই রক্ষনাবেক্ষণের জন্য নিয়মিত স্কোয়াটস করা দরকার।
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
১২১ তম বর্ষে উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস
আজ বড়দিন। এই বড়দিনে অজ বাংলার এক অখ্যাত গ্রামে ছোট আকারের একজন মানুষ জন্মেছিলেন। কাজটা ছোট ছিলনা, গোবরে পদ্মফুল উপমা সত্যি করে অশিক্ষার অন্ধকার সরিয়ে পৌঁছে গেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোরগোড়ায়। তারপর অধ্যাপনা, একাধিক নামি স্কুলে প্রধানশিক্ষকতা, কলেজে অধ্যক্ষ হওয়া। এখনকার মত প্রধানশিক্ষক - অধ্যক্ষ - উপাচার্য হওয়া সেই সময়ে জলভাত ছিল না। এই পদগুলো ছিল দুষ্প্রাপ্য ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, শ্রদ্ধার।
দেশভাগ, দেশত্যাগ, স্বজনহারা বিদেশ বিভূঁইয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু। মাত্র ৪৮ বৎসর বয়সে।এরই মধ্যে বাংলা সাহিত্যে তাঁর সংযোজন কবি, গীতিকার, নাট্যকার ও পুনরাবৃত্তবিদ হিসেবে। তাঁর অনন্য কীর্তি বাংলা ভাষার প্রথম পূর্ণাঙ্গ ব্যাকরণ রচনা।
আজ তাঁর ১২১তম জন্মদিন। বাঙালি ভুলে গেছে তাঁকে। বৌদ্ধিক সমাজ মনে রাখেনি, মনে রাখেনি তাঁর সমাজের মানুষ, প্রিয়জনেরা। নব্বই পেরিয়ে কেবলই দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাঁর কন্যা। তাঁর একমাত্র ছেলে অকালে ক্যান্সারে চলে গেছে। যাওয়ার আগে পলতা একটা ক্লাবকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে তাঁর বইগুলো সংরক্ষণ করার, দূর্গানগরে আম্বেদকর মিশনে একটা কক্ষ তৈরি করেছেন তাঁর নামে। কিন্তু কোথাও এদিন পালন করার কথা শোনা যায় না।
তাঁর কোন ছবি নেই। এ আক্ষেপ কিছু মেটানো যায় তাঁর মেয়ের থেকে শুনে শুনে কোন শিল্পীকে দিয়ে প্রতিকৃতি আঁকিয়ে নিয়ে। মেয়ে মরে গেলে সে সুযোগ হাতছাড়া হবে। তৈরি করা দরকার একটা স্মৃতি রক্ষা কমিটি, তাঁকে নিয়ে গবেষণা হতে পারে।
কিন্তু কে বা কারা এগিয়ে আসবে ?
আচার্য উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এর জন্মদিনে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম।
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
অদ্ভুত আঁধার
অদ্ভুত আঁধার এক । জীবনানন্দ দাশ ।
জীবনানন্দের কবিতা মানেই দুর্বোধ্য কবিতা। যেমন বিষ্ণু দে। আগে এই দুইজনকে এড়িয়ে চলতাম। মাঝে মাঝে পড়তে পড়তে মনে হলো - জীবনানন্দকে একটু একটু বুঝি।
ইদানিংকালে খুব বেশি প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে কবিকে।
এখনকার ভারতবর্ষে অনিয়ম যেন নিয়ম। মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী পূজা পাচ্ছে, খুনি -ধর্ষকরা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সাজা থেকে মুক্তি পেয়ে সম্বর্ধিত হচ্ছে, সরকার অপরাধীদের ধরার জন্য চেষ্টা করছে না বরং অপরাধীদের বাঁচাবার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিচারালয়ে লড়ছে। এমন আবহে আবার পড়লাম জীবানানন্দের "অদ্ভুত আঁধার এক"। এবার আর একদম কঠিন মনে হলো না। কবি যেন এই সময়ের ঘটনা দেখেই লিখেছিলেন -
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই- প্রীতি নেই- করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব’লে মনে হয়
মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।
(অদ্ভুত আঁধার এক কবিতাটি মনবিহঙ্গম কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এই কাব্যগ্রন্থ টি কবি জীবনানন্দ দাশের রচিত কাব্যগ্রন্থ । যা কবির মৃত্যুর অনেক বছর পর ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়। এ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশের বহু আগে ১৯৫৪-এর ২২ অক্টোবর এক ট্র্যাম দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জীবনানন্দ লোকান্তরিত হয়েছিলেন। এই কাব্যগ্রন্থটিতে মোট ৩৮ টি কবিতা স্থান পেয়েছে।)
বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
ও মেয়ে, অস্ত্র রাখো কোমরে
ও মেয়ে, অস্ত্র রাখো কোমরে
কামদুনি তুমি লড়লে এবং মরলে কিন্তু দাগ হলে না
খাদ্য হলে খাদক হলে না
হাথরস তুমি লড়লে এবং মরলে কিন্তু দাগ হলে না
খাদ্য হলে কামুকের, খাদক হলে না
হাসখালি মধ্যমগ্রাম উন্নাও
এমন হাজার হাজার জায়গায়
এমন হাজার হাজার মেয়ে
দেশের কোনে কোনে দিনে অথবা রাতে
খাদ্য হয় প্রতিনিয়ত কিন্তু খাদক হয়না।
ওঁরাও লড়েছিল ওঁরাও মরেছিল
খাদ্য হয়ে , খাদক হয়ে।
১৭৩০ তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গার মহারানী ভেলুগাছিয়ার
১৮৫৫ সাঁওতাল বিদ্রোহ
সিধু কান্হু চাঁদ ভৈরব ডোমেন মাঝিদের সাথে
লড়েছিল ফুলো ঝানো
লড়েছিল মাকি টিগি নাগী লেম্বু সালি চাম্পী...
একুশ ধর্ষকের প্রাণ নিয়েছিল
নিজেরা ধর্ষিত হয়েছিল এবং মরেছিল।
১৮৫৭ সিপাহী বিদ্রোহ
লড়েছিল ঝাঁসির রানী লক্ষীবাঈ
বেগম হযরত মহল, উদাদেবী এবং হযরত মহল বাহিনীর বীরাঙ্গনারা
তাঁরা লড়েছিল মরেছিল, দাগ কেটে রেখেছিল।
১৯৪৬ তেভাগা আন্দোলনের শহীদ রাসমণি
ময়মনসিংহের সরস্বতী ধর্ষণ ও খুনের বদলা নিয়েছিলেন ধর্ষকের মুন্ডু ধড় থেকে আলাদা করে
তারপর ইংরেজের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে প্রাণ দান।
ইতিহাসের লম্বা সারিতে অনেক মুক্তো
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত....
যাঁরা লড়েছে মরেছে দাগ কেটে গেছে
যেমন ফুলন দেবী
ধর্ষিত হয়ে মরার আগে মারলেন না
দলিত দর্পে গর্বিত করলেন নিপিড়িত সমাজকে।
কেউ দাগ কাটে কেউ দাগ কাটে না
যাঁরা দাগ কাটে না তাঁরা সবাই নিরস্ত্র
যাঁরা দাগ কাটে তাঁরা সবাই সব সসস্ত্র ।
মরার আগে মারতে হবে
মারতে হলে অস্ত্র চাই
দাগ কাটতে হলে
অস্ত্র চাই
মায়েদের মেয়েদের কোমরে কোমরে।।
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
সিঁড়ি ভাঙ্গার গল্প
সিঁড়ি ভাঙ্গার গল্প
উদ্বাস্তু জীবন পানার মত। ভাসমান, মাটিতে শিকড় থাকে না। হাওয়া যেদিকে যেমন বয় সেদিকে তেমন সরতে থাকে।
ডাঃ অরুণ সরকার, আমাদের সর্বজন প্রিয় ভোলা একজন সাদাসিধে, মেধাবী ছাত্র ছিলেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে অজ গ্রাম ছেড়ে শহর কলকাতায় আসেন। প্রিয় বিষয় পদার্থ বিজ্ঞান। ভর্তি হন স্বপ্নের প্রেসিডেন্সি কলেজে। কিন্তু সহপাঠীদের মিস্টি মধুর শারীরিক ও মানসিক হেনস্থা সইতে পারেন না। জীবনের প্রথম উপাধি " সোনার চাঁদ" উপহার পান এই বিশ্ব বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সমাজের উচ্চবর্ণীয় একাধিপত্য থেকে শিক্ষায় ভাগ বসানো যে কতটা কষ্টকর তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেন। বিষয়টি এতই অসহনীয় ছিল যে তিনি তাঁর স্বপ্নের প্রেসিডেন্সি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এবার ভর্তি হন মৌলানা আজাদ কলেজে। সেখানেও সেই নির্যাতন তাঁর পিছু নেয়। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি বলে পালিয়ে আসেন কলেজ থেকে।
যখন ভাবছেন এবার কোথায়? তখনই ডাক আসে আই আই টি, খড়গপুর থেকে। কলকাতা ছেড়ে চলে যান খড়গপুর।
গার্জিয়ানরা যখন নিশ্চিন্ত - ছেলের আর কোন অসুবিধা হবে না, মাসখানেকের মধ্যে টেলিগ্রাম এলো বাড়িতে - তিনি হাসপাতালে। অল্প স্বল্প জ্বালাতন - খেতে বসলে দাদারা পাতে বালি দিত আদর করে। স্নানের সময় আদর করে সাবান মাখিয়ে দিত। স্নান শেষে সারা গায়ে তেল মেখে আবার স্নান। আবার সাবান আবার স্নান, আবার তেল আবার স্নান।সাবান - স্নান - তেল - স্নান -সাবান....এক নেভার এন্ডিং গেম। কতবার? কুড়ি বা ত্রিশ। তারপর তিন দিন তাঁকে ক্লাসে বা কেন্টিনে দেখা যায়নি। তিন দিন পর একবন্ধু খোঁজ নিতে গিয়ে দেখে হস্টেল রুমে জ্বরে বেহুঁশ হয়ে আছে। তারপর হাসপাতাল। হাসপাতাল থেকে আর হস্টেলে ফেরেনি সোজা বাড়ি। মায়ের ভোলানাথ মায়ের কোলে।
কিন্তু ভাল ছাত্র হওয়ার অপরাধে তাঁর আর মায়ের কোলে থাকা হলো না, আবার কলকাতায়।
ইতিমধ্যে সব কলেজে ভর্তির পর ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। আমি পড়তাম রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী কলেজ, খড়দহে। পদার্থ বিদ্যা রাজি হলোনা। মার্কশিট উল্টেপাল্টে দেখে রসায়ন বিভাগ রাজি হলো । ভর্তির দিন ঠিক হলো। কিন্তু ভর্তি হওয়া হলোনা। ইতিমধ্যে রেজাল্ট বেরোলো মেডিকেলের। এবার আর কোন বিশেষ আদরের মধ্যে পড়লেন না। এমবিবিএস, এমডি।
ভাসমান পানা কি অবশেষে মাটি খুঁজে পেল ?
তিনি পড়তে ভালোবাসেন। তাঁর অবসর মানে বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকা। হাজার কয়েক বইয়ের নিজস্ব সংগ্রহ। তারমধ্যে ইতিহাস সংক্রান্ত বইয়ের আধিক্য। বস্তুবাদী মানুষ। বাস্তবতা বা সত্য জানার আগ্রহ। তাঁর মনে হয়েছে - ইতিহাস সত্য প্রকাশ করে। সে বাস্তবতা যত নির্মম হোক না কেন ইতিহাস সত্য এড়িয়ে যায় না।
এতদিনে তিনি নিজের ভাললাগা চিহ্নিত করতে পেরেছেন। ইতিহাস সব চাইতে প্রিয় বিষয়। আক্ষেপ করেন - কেন ইতিহাস নিয়ে পড়লাম না। পেশা সংক্রান্ত অর্থাৎ চিকিৎসা বিষয়ক সব তথ্যে তিনি ওয়াকিবহাল কিন্তু যেকোন ইতিহাস তিনি গোগ্রাসে গিলতে থাকেন।
ডাঃ অরুণ সরকার ভোলাকে অনেক বার বলেছি প্রিয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে, লিখতে। ওসব আমি পারিনা - বলে এড়িয়ে গেছেন।
একবার নিজেই বললেন, জানিস্ আমাদের পুর্ব পুরুষ 'বাওয়ালী' ছিল কিন্তু আমরা 'সরকার' হলাম কী করে? অবশেষে আমি একটা খোঁচাবার সুযোগ পেলাম। বললাম - খুঁজে দেখ ইতিহাস কী বলে। কিছুদিন পরে বললেন - ইতিহাসে আমরা অর্থাৎ নমঃ শূদ্র তথা চন্ডালরা নেই !
শুরু হলো নিজের বংশ পরিচয় তথা সমাজ পরিচয় খোঁজা। আর সেই আত্মানুসন্ধান বা শিকড়ের খোঁজ তুলে আনলো কিছু মণি-মাণিক্য যা ভবিষ্যত ইতিহাস অনুসন্ধানে খোরাক যোগাবে। এবার লিখতে থাকলেন আর একটা পারিবারিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানাতে থাকলেন।
আমাদের জন্মস্থান পূর্ব বাংলায়, যথার্থ ভাবে দক্ষিণ পূর্ব বাংলায়। বাংলার এই দক্ষিণ পূর্ব ভাগেই এক আদিম কৌম গোষ্ঠী হিসেবে বঙ্গ তথা চন্ডাল তথা নমঃশূদ্র সমাজের বিস্তার। লেখক চেষ্টা করেছেন সূদূর অতীতের সন্ধান নিতে। কিন্তু বড় দূরূহ কাজ। আমাদের প্রথিতযশা ইতিহাসবিদগণ এই জনগোষ্ঠীর দিকে নজর দেবার সময় ব্যয় করতে কার্পণ্য করেছেন। জাতব্যবস্থার উন্নাসিকতা তাঁরা ত্যাগ করতে পারেননি, তাই যথার্থ ইতিহাস তৈরি হয়নি। ভিনদেশী পর্যবেক্ষকদের সূত্র ধরে অতীত মন্থনের চেষ্টা করেছেন। আশা করেছেন, ভবিষ্যতের ইতিহাসবিদরা সত্য সন্ধানে সচেষ্ট হবেন।
আমরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের প্রিয়জনেরা, অবাক হয়েছি তাঁর ভাষার বাঁধনে। যিনি পরীক্ষার রচনা লেখার বাইরে কিছু লেখেননি তিনি কত সাবলীলভাবে লিখে চলেছেন। এবার আমরা উৎসাহিত হলাম এই লেখাকে বই আকারে প্রকাশ করার। এমন একজন মানুষের কাছে পরামর্শের জন্য গেলাম যিনি সর্বদা বট গাছের মত আমাদের প্রশ্রয় দেন। তিনি সাহিত্যিক, সমাজসেবী কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর। তিনি উৎসাহিত করলেন তবে একটা অংশ ছেঁটে দিলেন। লেখা শুরু হয়েছিল বাল্য স্মৃতির মধ্য দিয়ে শিকড়ের খোঁজ। তিনি স্মৃতিকথা আলাদা করতে বললেন। ( " শিকড়ের খোঁজে ফিরে দেখা" - স্মৃতিকথা নিয়ে আলাদা বই।) তাঁর পরামর্শ পাথেয় করে বইয়ের আকারে প্রকাশ পাচ্ছে ডাঃ অরুণ সরকার-এর বাঙলা তথা আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, সাহসী জনগোষ্ঠীর ইতিহাস অনুসন্ধানের বই - দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গ: ইতিহাস ও নমঃশূদ্র সমাজ।
এইভাবে একজন পেশাদার চিকিৎসক হয়ে উঠলেন একজন ইতিহাস লেখক।
গৌতম আলী
ছোট পত্রিকার ছোট লেখক
অমলিন
অমলিন অমল : আরেকটা ছোট্ট গল্প
অমল - পরশ জীয়নকাঠি হয়ে উঠলো দশ ডি-তে। অমল সন্ধ্যায় আলো ঝলমলে হলে স্মিত হাসিতে হাজির হলো মিতা। একটু পরেই বাঞ্ছারবাগানের হৈ হৈ পিসি থুড়ি তপতী হাজির। ওরা এলো একাকী- বেজোড় । আমরা জোড়ে যখন ইতিউতি করছি - আমাদের মাভৈ জানাতে জোড়ে এলো মানস। আর তাতেই হলের গমগমে বেড়ে গেল। গৃহকর্তা এতো ব্যস্ত যে এতক্ষণ অদৃশ্য হয়ে ছিলেন। গমগম থামাতে হাজির হলেন তিনি। সব সামলে তিনি আবার অদৃশ্য!
টেবিলহীন গোল বৈঠকে সময় দ্রুত সরে যাচ্ছিল। কে যে মধ্যমণি বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তবে মানস - জায়া ছিল অনন্যা। জানালার দিকে তাকাচ্ছিলাম যদি বাঞ্ছনীয় বাঞ্ছারবাগানের দু একটা প্রজাপতি উড়তে উড়তে ঢুকে পড়ে! হতাশ মনের ধাক্কা এলো মানসের ঠেলায়। বলল - চল চল মেয়ের কাছে।
সবাই মিলে ছবি তুলতে পোজ দিলাম। ক্যামেরা ক্লিক করার আগেই এসে গেল আমাদের শুক্লা রানী। বৃত্ত আজকের মত সম্পুর্ণ হলো।
তারপর তো কলকাকলি। সেই কাকলিতে থেকে ও ছিল না দুই জন - অমল ও তার গিন্নি। পৃথিবীর সব চিন্তা তাদের মগজে। এই আসরে সবার কাছে নতুন ছিল আমার ঝগড়ার সাথী। কিন্তু সবার চেনা হলেও আমার কাছে নতুন ছিল সম্পূর্ণা। তার কথা একটু না বললে মন হজম হবে না। হয়তো তোরা জানিস কিন্তু আমি জানায় নতুন।(গিন্নি বলে - টিউবলাইট, একটু পরেই জ্বলে)
১৯৭৬ সাল। আমি বঙ্গবাসী কলেজে প্রি-ইউ পড়ছি। বাঙলা সঙ্গীত জগতের এক নক্ষত্রপতন হলো। অকালে চলে গেলেন এক গানের কারিগর। সেদিন সংবাদ শিরোনাম দেখে অনেকের মত দুঃখ পেয়েছিলাম। সেই নক্ষত্র আজকে আলাপ হওয়া সম্পূর্ণার বাবা নচিকেতা ঘোষ। আমরা হারিয়েছিলাম একজন শিল্পীকে, আর স্কুল বয়সে সে হারিয়েছে তার অবলম্বন বাবাকে। আমার গ্রাম্য মানসিকতায় এটা এক বড় প্রাপ্তি। প্রথম যৌবনের এক মহান মানুষের ছোঁয়া পেলাম প্রান্তে এসে। এমনই এক অনুভূতি আছে Smita কে নিয়ে। যখন জেনেছিলাম সে রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ এর সন্তানের সন্তান!
ধান ভাঙতে শিবের গীত।
এদিন মানস চুপচাপ ছিল না যেমন অন্যদিন থাকে। সে জীবনসাথীর প্রতি খুব যত্নশীল ছিল। ভাবছিলাম - সে কি আমাদের মত ঝগড়াশীল কখনো হয়!!
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যসমূহ (Atom)
হে মহাজীবন
মাঝরাতে হৃদয় খুব উথাল পাথাল করছিল। সত্তরের কাছাকাছি পৌঁছে হৃদয় বসন্তের ডাক শুনতে পায়না, পরপারের ডাক শোনে। আর সে ডাক শুনতে ভয় করে, এই সু...
-
রোদ যখন উগ্র হয় মাটি ফাটে পুকুর শুকায়, গাছেরা দুর্বল হতে থাকে তবুও শিকড় খোঁজে অতল গভীরতা এই সত্য কোন সীমানা মানে না। প্রতিটি দেশে সংখ্য...
-
তোমার সামনে দাঁড়ালাম তুমি কি শিহরিত হলে আচম্বিতে! প্রতিক্ষার দীর্ঘদিন দীর্ঘশ্বাস অবসান হলো! সেই কবে কবে যেন অসংখ্য পায়ের ভিড়ে সংখ্যা...
-
( In Bengali and English) রাজুদা, কথা রাখলেন না কেন ? গৌতম আলী আচ্ছা রাজুদা, এটা কি আপনি ঠিক করলেন ? কথা দিয়ে কথা রাখলেন না ? এটা তো আপ...
