Lifestyle of a refugee is always disaster. One of my hoby is writing. Sometime I write short stories and poems in Bengali. Most of the writings are reflection of refugee life. I welcome you to my writing world. Please inscribe a comment, if possible. Thank you. Writing blog, writing blog for money, writing blog on instagram, writing blog posts, writing blog site, writing blog job, blogger, blogger platform, best free blogger site, ব্লগার, বাংলা ব্লগ, গল্প, কবিতা, গল্প ও কবিতা, #goutamaalee .
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
সিঁড়ি ভাঙ্গার গল্প
সিঁড়ি ভাঙ্গার গল্প
উদ্বাস্তু জীবন পানার মত। ভাসমান, মাটিতে শিকড় থাকে না। হাওয়া যেদিকে যেমন বয় সেদিকে তেমন সরতে থাকে।
ডাঃ অরুণ সরকার, আমাদের সর্বজন প্রিয় ভোলা একজন সাদাসিধে, মেধাবী ছাত্র ছিলেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে অজ গ্রাম ছেড়ে শহর কলকাতায় আসেন। প্রিয় বিষয় পদার্থ বিজ্ঞান। ভর্তি হন স্বপ্নের প্রেসিডেন্সি কলেজে। কিন্তু সহপাঠীদের মিস্টি মধুর শারীরিক ও মানসিক হেনস্থা সইতে পারেন না। জীবনের প্রথম উপাধি " সোনার চাঁদ" উপহার পান এই বিশ্ব বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সমাজের উচ্চবর্ণীয় একাধিপত্য থেকে শিক্ষায় ভাগ বসানো যে কতটা কষ্টকর তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেন। বিষয়টি এতই অসহনীয় ছিল যে তিনি তাঁর স্বপ্নের প্রেসিডেন্সি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এবার ভর্তি হন মৌলানা আজাদ কলেজে। সেখানেও সেই নির্যাতন তাঁর পিছু নেয়। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি বলে পালিয়ে আসেন কলেজ থেকে।
যখন ভাবছেন এবার কোথায়? তখনই ডাক আসে আই আই টি, খড়গপুর থেকে। কলকাতা ছেড়ে চলে যান খড়গপুর।
গার্জিয়ানরা যখন নিশ্চিন্ত - ছেলের আর কোন অসুবিধা হবে না, মাসখানেকের মধ্যে টেলিগ্রাম এলো বাড়িতে - তিনি হাসপাতালে। অল্প স্বল্প জ্বালাতন - খেতে বসলে দাদারা পাতে বালি দিত আদর করে। স্নানের সময় আদর করে সাবান মাখিয়ে দিত। স্নান শেষে সারা গায়ে তেল মেখে আবার স্নান। আবার সাবান আবার স্নান, আবার তেল আবার স্নান।সাবান - স্নান - তেল - স্নান -সাবান....এক নেভার এন্ডিং গেম। কতবার? কুড়ি বা ত্রিশ। তারপর তিন দিন তাঁকে ক্লাসে বা কেন্টিনে দেখা যায়নি। তিন দিন পর একবন্ধু খোঁজ নিতে গিয়ে দেখে হস্টেল রুমে জ্বরে বেহুঁশ হয়ে আছে। তারপর হাসপাতাল। হাসপাতাল থেকে আর হস্টেলে ফেরেনি সোজা বাড়ি। মায়ের ভোলানাথ মায়ের কোলে।
কিন্তু ভাল ছাত্র হওয়ার অপরাধে তাঁর আর মায়ের কোলে থাকা হলো না, আবার কলকাতায়।
ইতিমধ্যে সব কলেজে ভর্তির পর ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। আমি পড়তাম রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী কলেজ, খড়দহে। পদার্থ বিদ্যা রাজি হলোনা। মার্কশিট উল্টেপাল্টে দেখে রসায়ন বিভাগ রাজি হলো । ভর্তির দিন ঠিক হলো। কিন্তু ভর্তি হওয়া হলোনা। ইতিমধ্যে রেজাল্ট বেরোলো মেডিকেলের। এবার আর কোন বিশেষ আদরের মধ্যে পড়লেন না। এমবিবিএস, এমডি।
ভাসমান পানা কি অবশেষে মাটি খুঁজে পেল ?
তিনি পড়তে ভালোবাসেন। তাঁর অবসর মানে বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকা। হাজার কয়েক বইয়ের নিজস্ব সংগ্রহ। তারমধ্যে ইতিহাস সংক্রান্ত বইয়ের আধিক্য। বস্তুবাদী মানুষ। বাস্তবতা বা সত্য জানার আগ্রহ। তাঁর মনে হয়েছে - ইতিহাস সত্য প্রকাশ করে। সে বাস্তবতা যত নির্মম হোক না কেন ইতিহাস সত্য এড়িয়ে যায় না।
এতদিনে তিনি নিজের ভাললাগা চিহ্নিত করতে পেরেছেন। ইতিহাস সব চাইতে প্রিয় বিষয়। আক্ষেপ করেন - কেন ইতিহাস নিয়ে পড়লাম না। পেশা সংক্রান্ত অর্থাৎ চিকিৎসা বিষয়ক সব তথ্যে তিনি ওয়াকিবহাল কিন্তু যেকোন ইতিহাস তিনি গোগ্রাসে গিলতে থাকেন।
ডাঃ অরুণ সরকার ভোলাকে অনেক বার বলেছি প্রিয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে, লিখতে। ওসব আমি পারিনা - বলে এড়িয়ে গেছেন।
একবার নিজেই বললেন, জানিস্ আমাদের পুর্ব পুরুষ 'বাওয়ালী' ছিল কিন্তু আমরা 'সরকার' হলাম কী করে? অবশেষে আমি একটা খোঁচাবার সুযোগ পেলাম। বললাম - খুঁজে দেখ ইতিহাস কী বলে। কিছুদিন পরে বললেন - ইতিহাসে আমরা অর্থাৎ নমঃ শূদ্র তথা চন্ডালরা নেই !
শুরু হলো নিজের বংশ পরিচয় তথা সমাজ পরিচয় খোঁজা। আর সেই আত্মানুসন্ধান বা শিকড়ের খোঁজ তুলে আনলো কিছু মণি-মাণিক্য যা ভবিষ্যত ইতিহাস অনুসন্ধানে খোরাক যোগাবে। এবার লিখতে থাকলেন আর একটা পারিবারিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানাতে থাকলেন।
আমাদের জন্মস্থান পূর্ব বাংলায়, যথার্থ ভাবে দক্ষিণ পূর্ব বাংলায়। বাংলার এই দক্ষিণ পূর্ব ভাগেই এক আদিম কৌম গোষ্ঠী হিসেবে বঙ্গ তথা চন্ডাল তথা নমঃশূদ্র সমাজের বিস্তার। লেখক চেষ্টা করেছেন সূদূর অতীতের সন্ধান নিতে। কিন্তু বড় দূরূহ কাজ। আমাদের প্রথিতযশা ইতিহাসবিদগণ এই জনগোষ্ঠীর দিকে নজর দেবার সময় ব্যয় করতে কার্পণ্য করেছেন। জাতব্যবস্থার উন্নাসিকতা তাঁরা ত্যাগ করতে পারেননি, তাই যথার্থ ইতিহাস তৈরি হয়নি। ভিনদেশী পর্যবেক্ষকদের সূত্র ধরে অতীত মন্থনের চেষ্টা করেছেন। আশা করেছেন, ভবিষ্যতের ইতিহাসবিদরা সত্য সন্ধানে সচেষ্ট হবেন।
আমরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের প্রিয়জনেরা, অবাক হয়েছি তাঁর ভাষার বাঁধনে। যিনি পরীক্ষার রচনা লেখার বাইরে কিছু লেখেননি তিনি কত সাবলীলভাবে লিখে চলেছেন। এবার আমরা উৎসাহিত হলাম এই লেখাকে বই আকারে প্রকাশ করার। এমন একজন মানুষের কাছে পরামর্শের জন্য গেলাম যিনি সর্বদা বট গাছের মত আমাদের প্রশ্রয় দেন। তিনি সাহিত্যিক, সমাজসেবী কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর। তিনি উৎসাহিত করলেন তবে একটা অংশ ছেঁটে দিলেন। লেখা শুরু হয়েছিল বাল্য স্মৃতির মধ্য দিয়ে শিকড়ের খোঁজ। তিনি স্মৃতিকথা আলাদা করতে বললেন। ( " শিকড়ের খোঁজে ফিরে দেখা" - স্মৃতিকথা নিয়ে আলাদা বই।) তাঁর পরামর্শ পাথেয় করে বইয়ের আকারে প্রকাশ পাচ্ছে ডাঃ অরুণ সরকার-এর বাঙলা তথা আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, সাহসী জনগোষ্ঠীর ইতিহাস অনুসন্ধানের বই - দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গ: ইতিহাস ও নমঃশূদ্র সমাজ।
এইভাবে একজন পেশাদার চিকিৎসক হয়ে উঠলেন একজন ইতিহাস লেখক।
গৌতম আলী
ছোট পত্রিকার ছোট লেখক
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
হে মহাজীবন
মাঝরাতে হৃদয় খুব উথাল পাথাল করছিল। সত্তরের কাছাকাছি পৌঁছে হৃদয় বসন্তের ডাক শুনতে পায়না, পরপারের ডাক শোনে। আর সে ডাক শুনতে ভয় করে, এই সু...
-
রোদ যখন উগ্র হয় মাটি ফাটে পুকুর শুকায়, গাছেরা দুর্বল হতে থাকে তবুও শিকড় খোঁজে অতল গভীরতা এই সত্য কোন সীমানা মানে না। প্রতিটি দেশে সংখ্য...
-
তোমার সামনে দাঁড়ালাম তুমি কি শিহরিত হলে আচম্বিতে! প্রতিক্ষার দীর্ঘদিন দীর্ঘশ্বাস অবসান হলো! সেই কবে কবে যেন অসংখ্য পায়ের ভিড়ে সংখ্যা...
-
( In Bengali and English) রাজুদা, কথা রাখলেন না কেন ? গৌতম আলী আচ্ছা রাজুদা, এটা কি আপনি ঠিক করলেন ? কথা দিয়ে কথা রাখলেন না ? এটা তো আপ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন