(Short story)
মেয়েটার মাথায় এখন বীজগণিত। সমীকরণের সমীরণ। কলমের ডগায় চুল জড়িয়ে টেনে-হিঁচড়ে, কপালে কলম দিয়ে ঠক্ ঠক্ শব্দ তুলে, নাকের ডগায় দুর্যোধনের উরু ভাঙ্গার অসফল চেষ্টা করে, হাতের অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত ভাগ্য রেখার ওপর ভারতের রেলপথের ম্যাপ এঁকে অবশেষে বাপের শরণাপন্ন । তার মাতৃদেবী বুনো কচুর সমস্ত র্যাফাইডগুলি চিরতার জল মিশানো কণ্ঠে আমার দিকে নিক্ষেপ করে এখন রান্না ঘরে রুদ্র বীণা বাজাচ্ছেন। ঝন ঝন্ শব্দের মহালয় তারই প্রকাশ। কিন্তু আমার সমস্যা বিড়াল–আমার পড়ার ঘরে বংশ পরম্পরায় ইজারা নিয়েছে সে, মানে তারা।
কবে যে এসেছিল সেটা আমার মনে নেই। কোথা থেকে এসেছিল তা তো জানিই না। তবে তার অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন। সে বলতে যদিও একজনকে বোঝাচ্ছি, বাস্তবে একজন নয়। চতুর্থ বংশধর। সাদা মুখের কালো বিড়ালটা। জাতিতে মেয়ে। ‘মেয়ে জাত সহজে মরে না' প্রবাদকে সত্যে উপনীত করার জন্যেই বংশপরম্পরায় ওদের বংশ মেয়ের বংশ। আরেকটা ব্যাপারেও এদের মিল দেখেছি, সবার রংয়ের মধ্যেই কালোর আধিক্য। কারো লেজ সাদা, কারো পিঠ সাদা, কারো পেট বা ঠ্যাং সাদা। কিন্তু বাকি সব কালো। ব্যতিক্রমী যারা জন্মেছিল, বেঁচে থাকা তাদের হয়নি।
সে কিন্তু পোষা নয় বা তারা কেউই পোষা ছিল না। আদর-যত্ন মোটেই পেত না বাড়ির কারো কাছে। একেবারেই অচ্ছুত ছিল। এঁটো-কাঁটা খেয়েই বাঁচত। এঁটো-কাঁটাগুলো যে ওদের সামনে তুলে ধরতাম, তাও নয়। মাছ মাংস আমরা আয়েশ করেই খেতাম্ বা খাই। চেয়ারে পা দুলিয়ে টেবিলে খাবার রেখে খাই। অলক্ষ্যে টেবিলের তলায় জড় হয় সে বা তারা। টেবিলের উপরেরটা তো দেখতে পারে না, পা দোলানী দেখে। হয়তো কান খাড়া করে আয়েশি মুখের শব্দ শোনে। শব্দ না শুনলেও গন্ধ শোঁকে নিশ্চিত। খাবারের ইচ্ছেটা চাপা দিতে পারে না, অজান্তেই মুখ দিয়ে মিউ-মিউ মিহি স্বর বেরিয়ে আসে। মাথা নিচু করলে দেখতে পাই আধ-বোজা বিনয়ে পায়ের ধারে বসে যেন মিনতি করছে—বাপ, দুটো খাবার। খাবার সময়ে এই বিনয়-বিনয় ভাব একদম পছন্দ হয় না। কেমন ভিখিরি স্বভাব। চাণক্য স্বভাবে খাওয়া ফেলে তেড়ে যাই বা জুতোর গোত্তা লাগাই, মুখে-বুকে যেখানেই লাগুক না কেন। আত্মরক্ষায় দৌড়ে পালায়। নিরাপদ দূরত্বে অপেক্ষা করে। খাওয়া শেষ করে এঁটো-কাঁটায় জল মিশাই। ওদের প্রতি হিংসা করে জল মিশাই না, স্বভাববশতই মিশাই। জল মিশানোর পর সেগুলো ফেলনা খাবার হয়ে যায়। বিড়ালের পক্ষেও তা আর খাবারযোগ্য থাকে না। তবু সেই ফেলনা চেটে-পুটেই বেঁচে আছে তারা। রোগা লিক্লিকে হয়ে এভাবেই বেঁচে থাকে। খিদের তাগিদে দেয়াল টপকে এ-বাড়ি সে বাড়িও যায়।
সাদা মুখের কালো বিড়ালটার তখনো জন্ম হয়নি। পেট ভারী তার মা ঘুরে বেড়ায়। আমাদের চোখে এটা সাধারণ ঘটনা। তার পেটটা তো সারা বছরই ভারী থাকে। সেই রকম ভারী পেটে রান্না ঘরের আশে পাশেই ঘোরে বেশি। এই সময় বড়বেশী ম্যাও-ম্যাও করে। খিদে-টিদে বাড়ে বোধ হয়। আমার গিন্নিও সেই সময় পোয়াতি। তাকে সাবধানে চলাফেরা করতে হয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে সব ভিটামিনযুক্ত খাবার খেতে হয়। তো বিপত্তি ঘটলো একদিন। কাজের মেয়েটা ছিল না। রান্না ঘরে গিন্নিকেই ঢুকতে হয়েছে। বিড়ালটা প্রায় পায়ে পায়ে ঘুরছে। ম্যাও ম্যাও তো আছেই। বিরক্ত হয়ে আমি একবার ঝাটা দিয়ে অতর্কিতে মারলাম। দৌড়াবার সামর্থ ততটা ছিল না, যথাসাধ্য ভারী শরীরটা নিয়ে বাইরে গেল। চোখের আড়ালে গেল না, দাঁড়িয়ে আমার দিকে চোখ রেখে হাঁফাতে লাগল। আমি সরে যেতেই আবার পায়ে পায়ে এসে গিন্নির পায়ের কাছে হাজির।
ভাতের ফ্যান বাইরে ফেলবার দরকার ছিল। গিন্নি ফ্যানের গামলাটা নিয়ে দরজার বাইরে গেল। পায়ে পায়ে ডাকতে ডাকতে বিড়ালটাও ৷ হয়তো তার লক্ষ্য ছিল ফ্যান বা ভিতরের দু’চারটে ভাত। কিন্তু আমার গিন্নি বিড়ালের জ্বালাতন সহ্য করতে পারল না। পায়ে জড়াতে থাকলে কঁহাতক সহ্য করা যায়? বিড়ালের জন্যে সে নিজে যদি হুমড়ি খেয়ে পড়ে যায়? বিরক্ত হয়ে গিন্নি প্রথমে বিড়ালটাকে একটা লাথি মারল। তারপরই গরম ফ্যান ঢেলে দিল বিড়ালটার গায়।
কষ্ট হয়েছিল বৈকি। গরম ফ্যান পোয়াতি বিড়ালের গায়ে ঢালার পর বিড়ালের দুর্দশায় কষ্ট পেয়েছিলাম আমরাও। সাদা মুখের মায়ের জন্যে সেই একবারই মাত্র কষ্ট হয়েছিল আমার। কয়েকদিনের জন্যে সারা গায়ে দগদগে ঘা হয়ে গেল। কষ্টের বদলে ঘেন্না জায়গা দখল করল ধীরে ধীরে। তাছাড়া স্বস্তি পাচ্ছিলাম অন্য কথা ভেবে। বিড়ালটার জন্যে আমার গিন্নিরও একই দশা হতে পারত। গিন্নি যদি পড়ে যেত, যদি ফ্যানে পুড়ে যেত সারা গা! ভাবতেও কেমন শিউরে উঠি। ভাগ্যিস সেরকম কিছু ঘটেনি।
সাদা মুখের কালো বিড়ালটা আমার দেখা চতুর্থ বংশধর। পেটে খাবার থাক বা না থাক সে এখন কৈশোরে হুট্-পাট করছে। মাতৃপন্থী হতে আরেকটু সময় লাগবে। অঘটন ঘটবার সম্ভাবনা তো আমি দেখি না, মায়েদের অনুসারী তাকে হতেই হবে। এটাই নিয়ম। কিসের নিয়ম, কেন নিয়ম— সে সব আমি জানি না। তবে পেটে যাদের নিশ্চিন্ত খাবার জোটে না দু’বেলা। তাদের নিয়ম এরকমই। পায়ে পায়ে চলাটাই নিয়ম।
সাদা মুখের পূর্ব মায়েদের ভূমিকা ছিল এক। সবাই এঁটো-কাঁটা খেয়ে কোন মতে জীবন ধারণ করত আর সন্তানের জন্ম দিত। আর তাদের জন্যে আমার ভূমিকা ছিল সাফাইওয়ালার মত। এত মারধোর করতাম অথচ ঠিক কোন এক ঘরে জন্ম দিত সন্তানের। ওর প্রথম মা-র কথাই বলি। কৈশোর পেরোবার সন্ধিক্ষণে কোথা থেকে একটা মদ্দা বিড়াল এসে হাজির হল। দু'চার দিন পরে আরো দু’চারটা। প্রথম দু’চারদিন পালিয়ে বা লুকিয়ে বেড়াল। হয়তো ভয়ে বা অন্য কোন কারণে। তারপরই সে সাহসী হয়ে উঠল। মহারাণীর চালে নিজের মত চলাফেরা করে। তার পিছে কয়েকটা মদ্দা। মাঝে মাঝে মদ্দা-বিড়ালের চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে যায় মাঝরাতে। নিজেদের মধ্যেই ঝগড়া করে। রাণী একপাশে চুপচাপ। যে জেতে সেই অধিকার পায় তার।
এইভাবে চলতে চলতে ভারী হয়ে আসে মহারাণীর শরীর। তখন আর সে মহারাণী থাকে না। এক এক করে সরে পড়ে মদ্দা বিড়ালেরা। সে তখন রান্না ঘরের আশেপাশে সময় কাটায়। পায়ে পায়ে ঘোরে। তার আসন্ন মাতৃত্বের চিন্তায় আমরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠি। তিতিবিরক্ত হয়ে উঠি বিড়ালের বাচ্চা প্রসবে। নিরাপদ কোন জায়গায় তিন বা চারটে বাচ্চার জন্ম দেয়। ভবিষ্যৎ ভেবে আতঙ্কিত হই আমরা। একটার জ্বালাতনে দিশেহারা, আবার যদি চারটা বা পাঁচটা বিড়াল বাড়িতে থাকে! অগত্যা নির্মম হতে হয়। তুলোর মত তুলতুলে বাচ্চাগুলোর চোখ ফুটবার আগেই ব্যাগ-বন্দি করে রাতের অন্ধকারে অন্যপাড়ায় বা খালের ধারে বা নির্জন ভাগাড়ে ফেলে আসি। জীবিত অবস্থায়ই রেখে আসি। ভেবে সান্তনা পাই—জীব হত্যার পাপ থেকে তো রক্ষা পেয়েছি। ভগবানের সৃষ্টি ভগবানের জিম্মায় রেখে আসি। প্রায় স্নান করে যখন ঘরে ফিরি, গিন্নির তৃপ্তি মাখা হাসি মনে স্বস্তি দেয়।
সন্তানহারা মা দু’চারদিন বড় করুণভাবে ডাকে। এ-ঘর সে ঘর যায়। ঘরের আশে-পাশে ঘুরে ডাকতে থাকে। আমার গিন্নি এই করুণ কান্না একদম সইতে পারে না। গরমের মধ্যেও জানালা দরজা সব বন্ধ করে দেয়। বিড়ালের কান্না যাতে কানে না প্রবেশ করে তার সব ব্যবস্থা করে।
কিন্তু দু’চারদিনের মধ্যেই অবস্থা ধীরে ধীরে পাল্টাতে থাকে। মদ্দাগুলি আবার জড় হয়। প্রথমে দূরে দূরে বসে থাকে। দূরত্ব কমতে থাকে আস্তে আস্তে। ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে আবার।
ইতিমধ্যে আরেকটা ব্যাপার লক্ষ্য করি, যা আমাকে অনেকটা স্বস্তি দেয়। সন্তান প্রসবের পর আমাকে আর বস্তায় বা থলিতে করে বাচ্চাদের দূরে ফেলতে হয় না ৷ মদ্দাগুলোই দূরে সরাবার ব্যবস্থা করে। প্রসবের কয়েকদিনের মধ্যে তারা এসে হাজির হয়। ওৎ পেতে থাকে। এইসময় মা সহজে তাদের কাছে ভেড়ে না। তাই হয়তো রেগে যায় তারা। সব রাগ গিয়ে পড়ে বাচ্চাদের উপর। ফাঁক পেলেই তীব্রগতিতে বাচ্চাদের কাছে যায়। চকিতে ঘাড়ের কাছে কামড় বসায়। তাতেই কেল্লা ফতে। এক এক করে সন্তান হারাতে থাকে মা।
ক্রমাগত সন্তান হারাতে হারাতে মায়েরা কেমন অস্থির হয়ে ওঠে। বয়েস বাড়ে তাদের। শেষের দিকে সন্তানকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। লুকোচুরি খেলা চলে ৷ আমাদের সাথে, মদ্দাদের সাথে। তারই ফলে বেঁচে যায় কেউ কেউ। যেমন সাদা মুখের কালো বিড়াল ছানা বেঁচেছে, যেমন তার মা বেঁচেছে।
পোড়া দেহ নিয়েই সাদা মুখের জন্ম দেয়। কাঁচ ভাঙ্গা আলমারীর ভিতরে আঁতুড় ঘর বানায় মা। সবার অলক্ষ্যে জন্ম নেয় তারা। মোট তিনজন। যতই গোপনীয়তা থাকুক, অবোধ বাচ্চাদের মিহি ডাকে চেতন বাড়ে আমাদের। জাগ্রত চেতনায় হাজির হয় মদ্দারাও। চামড়াখসা পোড়া দেহও তাদের কামনা, হিংসা দমাতে পারে না। ভাঙ্গা আলমারীর ফাকে ঢুকে দাঁত বসাতে পারে না তারা। ওৎ পেতে বসে থাকে। আমিও চেষ্টা করি বাচ্চাদের বের করার। কিন্তু মা-বিড়ালের ধারালো দাঁতের শাসানীতে পিছু হঠতে হয়। সুযোগের অপেক্ষায় থাকি।
সন্তানের দুধের যোগান দেবার জন্যে নিজের খিদের কাছে হার মানতে হয়। সন্তর্পণে বেরিয়ে যায় খাবারের সন্ধানে। তাড়াতাড়ি করে চোেখ না ফোটা দুটো বাচ্চা বের করি। মিহি স্বরে ডাকতে থাকে তারা। তৃতীয়টা বের করার আগেই ছুটে আসে তাদের মা। বাইরে রাখা দুটোকে মুখে করে দ্রুত সরে পড়ে। তৃতীয়টা বের করে ভাগাড়ে চালান দিতে সচেষ্ট হই।
নিরাপদ জায়গা হারিয়ে ত্রস্ত হয় মা। লুকোচুরি শুরু হয়। এঘর সে ঘর, চৌকির তলা, আড়াল-আবডাল করতে থাকে। হুলোদের ভয়, গৃহস্বামীর ভয় বাচ্চাদের কাছ ছাড়া হতে চায় না। এরই মধ্যে হঠাৎ চিৎকার শুনি মা বিড়ালের। পাশের ঘরে গিয়ে দেখি মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে একটি বাচ্চা। কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রাণহীন হয়ে যায়। ওৎ পেতে থাকা হুলো শত্রু নিধন করে ফিরে গেছে। মৃত সন্তানের পাশে দাঁড়িয়ে অদ্ভুতস্বরে ডাকছে মা। অসহায় ভাবে তাকাচ্ছে একবার আমার দিকে, একবার মৃত সন্তানের দিকে। একটু আড়ালে দাঁড়াই। মৃত বাচ্চাটাকে মুখে করে আমাদের সামনে দিয়ে হেঁটে পাঁচিলের আড়ালে চলে যায় মা।
বাচ্চার সংখ্যা ছিল তিন। গতায়ু হল দুই। আরেকটা কোথায়? খুঁজতে থাকি। কিন্তু পাই না। মা বিড়ালকে দেখি বটে। বাচ্চাকে দেখি না। মনে মনে আশ্বস্ত হই, নিশ্চয়ই হুলো মেরে ফেলেছে। যাক্ আবার কিছুদিন নিশ্চিন্ত!
হঠাৎ একদিন পায়রার হাড় চিবোতে চিবোতে আবিষ্কার করি সাদা মুখো কালো বিড়াল ছানাকে। নিরাপদ বয়সের মায়ের ছোটবেলা নিয়ে হাজির সে। মনে হচ্ছিল পিট্পিট চোখে কংস মামাকে জিভ ভ্যাঙাতে হাজির হয়েছে সে। বুঝতে পারলাম, মাতা-মাতামহীদের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আমাকে শিক্ষা দিতে প্রস্তুত সে।
পোড়া দেহের ক্ষত নিয়ে ওর মা আরো রোগা হয়েছে। মাঝে মাঝে দেখতে পাই। সন্তানকে এঁটো-কাটার নিরাপদ আস্তানায় রেখে মা তখন বিবাগী। এক সকালে ধীর পায়ে দেয়ালের উপর হাঁটতে দেখলাম একটা হুলোকে। অনেকদিন পর। বুঝতে পারলাম। কৈশোর উত্তীর্ণ সময়ে হাজির সাদা মুখো বিড়াল।
রেল জংসন। চারনম্বর প্লাটফর্ম যেন চতুর্থ শ্রেণীর নাগরিক। এক, দুই, তিন থেকে চারের অকৌলীন্য সহজেই চোখে পড়ে। যেন তার বাসিন্দারা, পরজীবী এঁটেল পোকার মত। তাড়ালেও যায় না। কামড়ে পড়ে থাকে ষ্টেশন চত্বরে। তাড়িয়ে দিলেও দু’চারদিনের মধ্যে আবার এসে জড় হয়। ছেলে-মেয়ে, জীবন জীবিকা, ঘর-সংসার—সবকিছুই তাদের ষ্টেশন ঘিরে।
এক পরজীবী পরিবারের সদস্য বোবা মেয়েটি। কোমরে ঢিলে রবারের প্যান্ট, কালো, তেলহীন তামাটে চুল। লুডো খেলে, গুলি খেলে, কখনো এক্কা-দোক্কা। আগাছার মত জন্মানো হাড় জির-জিরে বাচ্চাদের কোলে নেয়। বাবাকে দেখেনি কোনদিন। প্রকাশ্য আলোয় তার বাবার অস্তিত্ব নেই বলে। যেমন ছিল না তার মায়ের বাবা, যেমন ছিল না তার দিদিমার বাবা। বোবা মেয়েটি কৈশোরের শেষের লজ্জার মুখোমুখি আজ। সাদা মুখের কালো বিড়ালটির সাথে কখনো দেখা হয়নি তার। যদিও কয়েকটি শব্দ ওলট-পালট করলে ওদের জীবন অভিন্ন।
মেয়েকে সমীকরণ বোঝাতে সচেষ্ট হই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন